Monday, 21 September 2015

দৈত্য

নীল রাত আর ঝিঁঝি পোকার ডাক
পাশের ঘরে এক গর্ভবতী মহিলার ঘুমের নিশ্বাস 

হঠাত এক দৈত্যর  আবির্ভাব
দৈত্যটা খুব চেনা 
ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর 
যেন কতদিনের লোভনীয় শিকার 

কিছু বুঝে ওঠার আগেই 
আমার শ্বাস রোধ করতে চাইল
কি যেন একটা বলতে চাইছে ও 


আমার অন্তরের চিৎকারটা  আর বাইরে শোনা গেল না সেই রাতে 

মহিলাটি কে কি ডাকব ?
কিন্তু !

চোখের পলকে আমায় কব্জা করে নিল ও 
আর  তারপর  আমার টুঁটি চেপে ধরার বদলে 
কি যেন খুজতে লাগলো সারা শরীর জুড়ে 

জানিনা কেন আমি ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে যাচ্ছি 
হাত পা ছঠফঠ আর করছে না 
বুকের ভেতরটা  হিম হয়ে আসছে 

আমি ওর শক্ত মুঠোটা ছাড়াতে পারছি না কেন 
এক এক করে আমার শরীর কেন ও উন্মুক্ত করছে 

একি !
ও তো দৈত্য নয় !
ওকে তো আমি মনে মনে পুজো করতাম !

তবে কি আজ ই রক্ষক ভক্ষক এর রূপ নেবে ?
কিন্তু সে তো গল্পকথা 

একটা অসহ্য যন্ত্রণার সাথে সাথেই বুঝলাম এটা কোনো রুপকথা নয় 
এটা সেই রোজ সকালের কাগজের প্রথম পাতার  চেনা বাস্তব 

আমার শ্বাস রুদ্ধ হাত মুঠোয় বন্দী 
একটা গোঙানির আওয়াজ শুধু মিশে যাচ্ছে ঝিঁঝির ডাক আর কালো রাতে  

একটা সময় দেহটা শান্ত হয়ে এলো 
বোধহয় অসহায়তায় 

যন্ত্রণা বাড়ছে ক্রমাগত 
দৈত্য আরও যেন জাঁকিয়ে বসেছে 
পুরো শরীরটার ওপর
আর নিস্তার নেই 

আর যন্ত্রণা বোধ হচ্ছে না 
আমি এক দৃষ্টে তাকিয়ে ওর চোখে 

ওর চোখ বন্ধ 
মুখে একটা জীঘাংসার ছাপ 

দৈত্য হঠাত থেমে গেল 
আমার দিকে তাকালো 
আমার চোখের জল মুছিয়ে 
একটু হাসলো 

এই হাসিটাকি ওর ছিল 
নাকি আমার ভাগ্যের পরিহাস ছিল 
আজ ও জানি না  

আমি বিবস্ত্র 
একটু সম্বিত ফিরতেই বুঝলাম 
আত্মাকে রক্তাত এই ভাবেই করে মানুষ্ 

সেই রক্তের দাগ কেন জানিনা আজ ও গেল না 
মাঝে মাঝেই নিজের গায়ে পাই ওই রক্তের গন্ধ
ভয় পাই 
পাছে বাকিরাও ওই গন্ধটা পেয়ে যায় !

আচ্ছা , ওদের গায়েও কি আছে 
এরকম রক্তের গন্ধ ?

যন্ত্রনাটা আর নেই এখন 
শুধু ক্ষতটা লুকিয়ে রেখেছি 
যাতে ভুলে না যাই 
যে আমি কিন্তু মৃত।  


No comments:

Post a Comment