Thursday, 24 September 2015

পশুর প্রেম

এখন ভোর
বাইরে কয়েকটা কাক ডাকছে বোধ হয়
আমি এখনো জেগে

অর্ধ নগ্ন

অপেক্ষা করছি
আবার পাশবিক অত্যাচার শুরুর


পশু টা পাশেই শুয়ে
অঘোর নিদ্রায়
তৃপ্ত সে
সারা রাতের অতৃপ্ত পিপাসা মেটার তৃপ্তি


আমার পা গুলো এখনো একটু একটু কাঁপছে
পেটের নিচটা ও ব্যথা

বাড়ির কথা মনে পড়ছে
আমার বাড়ির জানলা
আমার বাড়ির ছাদ

এখন তো আমার বাড়ির সামনেও কাক ডাকছে

পশুটার ঘুম ভাঙ্গার সময় হয়ে এসেছে
আবার শুরু হবে সেই চিরাচরিত
প্রেমের বহিঃ প্রকাশের নামে শরীরী খেলা

যেখানে আমার ব্যথার চিৎকার এর উল্লাসে
মাতবে সারা ঘর
এ যেন যন্ত্রণা  উদযাপন এর মহা যজ্ঞ
আমার প্রতি তা চোখের জল যজ্ঞর  আহুতি
আমার ছটফটানি যজ্ঞ এ পশুবলির এ প্রতিকী

খানিকক্ষণ পর আমি শান্ত হয়ে পরি
যখন আমার দুই উরু দিয়ে গড়াতে থাকে
উদ্দাম ভালবাসার পরিনতি

শরীর ভেসে যায় পলাশের মত লাল রঙ্গে
কামিনী ফুলের গন্ধের মত তীব্র একটা যন্ত্রনায় কাঁপতে  থাকে সারা শরীর

ততক্ষণে চোখের জলের দাগ গুলো শুকিয়ে যায়
জেগে  থাকে একটা নির্বাক দৃষ্টি

পশুর তৃষ্ণা বুঝি মিটলো
ক্লান্ত সে আশ্রয় খোঁজে
আবার এই শরীরেই

আমায় বলে  আমি নাকি খুব সুন্দর
বলে আমায় বিয়ে করতে খুব ইচ্ছে করে ওর

আমার ও জিগ্যেস করতে মন চায়

কাকে?
আমার আমিকে ?

 নাকি এই দেহটাকে ?

Monday, 21 September 2015

দৈত্য

নীল রাত আর ঝিঁঝি পোকার ডাক
পাশের ঘরে এক গর্ভবতী মহিলার ঘুমের নিশ্বাস 

হঠাত এক দৈত্যর  আবির্ভাব
দৈত্যটা খুব চেনা 
ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর 
যেন কতদিনের লোভনীয় শিকার 

কিছু বুঝে ওঠার আগেই 
আমার শ্বাস রোধ করতে চাইল
কি যেন একটা বলতে চাইছে ও 


আমার অন্তরের চিৎকারটা  আর বাইরে শোনা গেল না সেই রাতে 

মহিলাটি কে কি ডাকব ?
কিন্তু !

চোখের পলকে আমায় কব্জা করে নিল ও 
আর  তারপর  আমার টুঁটি চেপে ধরার বদলে 
কি যেন খুজতে লাগলো সারা শরীর জুড়ে 

জানিনা কেন আমি ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে যাচ্ছি 
হাত পা ছঠফঠ আর করছে না 
বুকের ভেতরটা  হিম হয়ে আসছে 

আমি ওর শক্ত মুঠোটা ছাড়াতে পারছি না কেন 
এক এক করে আমার শরীর কেন ও উন্মুক্ত করছে 

একি !
ও তো দৈত্য নয় !
ওকে তো আমি মনে মনে পুজো করতাম !

তবে কি আজ ই রক্ষক ভক্ষক এর রূপ নেবে ?
কিন্তু সে তো গল্পকথা 

একটা অসহ্য যন্ত্রণার সাথে সাথেই বুঝলাম এটা কোনো রুপকথা নয় 
এটা সেই রোজ সকালের কাগজের প্রথম পাতার  চেনা বাস্তব 

আমার শ্বাস রুদ্ধ হাত মুঠোয় বন্দী 
একটা গোঙানির আওয়াজ শুধু মিশে যাচ্ছে ঝিঁঝির ডাক আর কালো রাতে  

একটা সময় দেহটা শান্ত হয়ে এলো 
বোধহয় অসহায়তায় 

যন্ত্রণা বাড়ছে ক্রমাগত 
দৈত্য আরও যেন জাঁকিয়ে বসেছে 
পুরো শরীরটার ওপর
আর নিস্তার নেই 

আর যন্ত্রণা বোধ হচ্ছে না 
আমি এক দৃষ্টে তাকিয়ে ওর চোখে 

ওর চোখ বন্ধ 
মুখে একটা জীঘাংসার ছাপ 

দৈত্য হঠাত থেমে গেল 
আমার দিকে তাকালো 
আমার চোখের জল মুছিয়ে 
একটু হাসলো 

এই হাসিটাকি ওর ছিল 
নাকি আমার ভাগ্যের পরিহাস ছিল 
আজ ও জানি না  

আমি বিবস্ত্র 
একটু সম্বিত ফিরতেই বুঝলাম 
আত্মাকে রক্তাত এই ভাবেই করে মানুষ্ 

সেই রক্তের দাগ কেন জানিনা আজ ও গেল না 
মাঝে মাঝেই নিজের গায়ে পাই ওই রক্তের গন্ধ
ভয় পাই 
পাছে বাকিরাও ওই গন্ধটা পেয়ে যায় !

আচ্ছা , ওদের গায়েও কি আছে 
এরকম রক্তের গন্ধ ?

যন্ত্রনাটা আর নেই এখন 
শুধু ক্ষতটা লুকিয়ে রেখেছি 
যাতে ভুলে না যাই 
যে আমি কিন্তু মৃত।  


ভালোবাসি তোকে

সেই দিন টা মনে কি পরে তোর ?
তোর পাশে বসেছিলাম

আর তারপরটা ইতিহাস !

অনেক বছর কেটে গেছে মাঝে
জানি। 

কিন্তু তুই কি জানিস
বছর বাড়ার সাথে,
সমানুপাতে,
বেড়েছে অমোঘ এইই টান 

তখন কি আর জানতাম এটাই সেই স্বর্গীয় বন্ধন ?
যার কথা ছোট্ট বেলায় পড়েছি শরৎচন্দ্রর গল্পে 

গল্প যে সত্যি হয় 
তুই এলি তাই জানলাম 

তারপর কত ভুল কত ঠিক পার করে
আজ খালি হাতে দাড়িয়ে 
তোর একটুখানি ভালবাসার অপেক্ষায় 

আজকের সত্যিটা আমি অস্বীকার করছি না  
কিন্তু মিথ্যেও বলতে পারছি না এইই অনুভূতিটাকে
 
যেটা দিনে-রাতে আমায় জীবন্মৃত করে রেখেছে 
যেটা আমায় রোজ স্বপ্ন দেখায় 
যেটা আমার রোজ স্বপ্ন ভাঙ্গে 
যেটা আমায় কালকের জন্য আরেকবার বাঁচতে শেখায় 
যেটা অসম্ভব কে সম্ভবে পরিনত করার মিত্থ্যে আশা জোগায় 

ভালোবাসি তোকে। 
কি করে এত সহজে হার মেনে নেব বলতে পারিস !

আজ চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে
আমি তোকে ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি
অনেকখানি। 

আর কোনো উপায় নেই আমার 
এই চক্রব্যূহ থেকে বেরোনোর 
আমার মন আর মানছে না কোনো কঠিন সত্যি 
শুধু ভালবাসছে তোকে 
শুধু ভালবাসছে। 

Wednesday, 16 September 2015

অনেকদিন পর

অনেকদিন পর
তোর লাল পাঞ্জাবি টার কথা মনে পড়ল
আর মনে পড়ল আমে কোলে তোর মাথা রাখার কথা

কি সুন্দর তুই

আমার আঙ্গুলের ফাকে তোর এলোমেলো চুল
তোর মুখের সেই আদর

তোর স্মৃতি তোর হাসির মতই সুন্দর

 তোকে এত বছর পর প্রথম দেখা
তুই দাড়িয়েছিলি  ওপরে
আমার হৃদস্পন্দন টা আরো একবার যেন থমকে গেল

তোর নিশ্বাস খুব কাছ থেকে আবার অনুভব করলাম
আরো একবার

তোর জামা টা আঁকড়ে দাড়ালাম
আরও একবার

তোর হাত তা আমার গালে রাখলি তুই
আরও একবার

আমার চোখে তাকালি
আরও একবার

এই বার আর তোর চোখ থেকে চোখ সরাইনি
একটা পলক ও ফেলতে ইচ্ছে করছিল না

আমাকে ভালোবাসলি অনিচ্ছা সত্বেও
আরও একবার

হয়ত শেষবার

আজ ও  আমি পড়ে আছি
সেই মুহূর্ত গুলো আঁকড়ে।

শুধু তুই নেইই ওখানে।

কিন্তু পড়ে আছে এখনো
তোর স্পর্শ ,
তোর চাহনি ,
তোর চোখের আদর,
আর অনেক খানি তুই।

শুধু হারিয়ে গেছে একটাই
"আমরা"।

যন্ত্রণা


যন্ত্রণা ,
এও কি মধুর হতে পারে ?

চোখে তো তোর  জল,
তবু  ব্যথার জন্য কেন তুই  পাগল ?

আমি জানি
মরতে চাস তুই।
কিন্তু ,
সে তো ভালোবেসে।

নাকি ভালবাসার আঘাতে ?


যত আঘাত পাস ,
তত বাড়াস সহ্যর  সীমা।

রোজ রাতে দিনে যে তোকে ছিন্ন ভিন্ন করে
রক্ত মাখা ওই হাত টা তোর এত পছন্দ ?

ওর গায়ে তুই পাস না তোর জন্য ঘেন্নার গন্ধটা ?
ওর চোখে কি দেখিস না নিষ্ঠুরতার ছায়া ?

তোর চোখের চাহনি ও এড়াতে পারেনা ঠিকই
তোর শরীর ওকে আকর্ষণ করে ঠিকই

কিন্তু

তুই ভুলিস না তুই ওর কাছে শুধুই একটা ভুল অতীত
তোর ভালবাসা ওকে স্পর্শ করে না


তোর এই অনুভূতি গুলো ওর কাছে
পাঠ্যক্রম এর সেই এক ঘেয়ে কবিতা।
যার সুরেলা ছন্দই তাকে করে তোলে,
বড্ড একঘেয়ে আর অসহ্য।

জানি , অবাধ্য তোর মন।
অশান্ত চঞ্চল দিশেহারা
এক ফোঁটা বৃষ্টির আশায়।

এইই প্রখর উত্তাপের সাথে
পারবে কি যুঝতে ?

নাকি একদিন শুষে নেবে তোর শেষ রক্ত বিন্দুটাও ?